Jukti ai কি? এই বাংলাদেশি AI প্ল্যাটফর্ম কি সত্যিই আপনার সময় ও টাকা বাঁচাতে পারবে?

Jukti.ai হলো একটি অত্যাধুনিক বাংলাদেশি AI প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি খুব সহজেই প্রফেশনাল মানের ছবি ও ভিডিও এডিট করতে পারবেন।

Jukti ai কি? বাংলাদেশি AI প্ল্যাটফর্ম
Photo from Jukti.ai

আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা সবাই কমবেশি কনটেন্ট তৈরি করি। সেটা facebook বা instagram এর জন্য আকর্ষণীয় ছবি হোক, ইউটিউবের জন্য তথ্যবহুল কোনো ভিডিও, অথবা নিজের ই-কমার্স প্রোডাক্টের নজরকাড়া ফটো। কিন্তু প্রফেশনাল মানের ছবি বা ভিডিও এডিটিং করতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন হয় Adobe Photoshop বা Premiere Pro এর মতো দামি দামি সব সফটওয়্যার। শুধু এটাই নয়, আপনাকে এগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ব্যবহার করা শিখতে হবে। এতে অনেক ধৈর্য এবং সময় লাগবে। তাছাড়া অনেকের পক্ষে দামি laptop বা computer কেনা সম্ভব হয়না। 

কেমন হতো যদি কোনো AI প্লাটফর্ম আপনার এই কাজগুলোকে সহজ করে দিতো? আর এই সব সমস্যাগুলির জন্য চমৎকার সমাধান নিয়ে এসেছে jukti.aiকিন্তু আসলে এই Jukti ai কি এবং কীভাবে এটি আপনার জীবনকে সহজ করতে পারে? চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

Jukti ai কি?

সহজ কথায়, Jukti ai হলো বাংলাদেশের তৈরি নতুন একটি অত্যাধুনিক AI প্ল্যাটফর্ম। যা ছবি এবং ভিডিও এডিটিং এর জটিল এবং সময়সাপেক্ষ কাজগুলোকে কয়েক ক্লিকেই সম্পন্ন করে দেয়। এই AI প্লাটফর্মটি Jukti Technologies Limited দ্বারা পরিচালিত। এই প্ল্যাটফর্মটির মূল লক্ষ্য হলো কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ডিজিটাল মার্কেটার, ই-কমার্স ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ এজেন্সির কাজগুলো AI এর মাধ্যমে আরো সহজ করে দেওয়া। এইগুলো দিয়ে তারা কোনো প্রযুক্তিগত দক্ষতা ছাড়াই দ্রুত ও সহজে  খুব ভালো ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট তৈরি করতে পারবে।

এটা বাংলাদেশীদের জন্য গর্বের বিষয় ভাই। এতদিনে কেউ তো একজন নিজের দেশের কথা ভেবে বাংলাদেশের প্রথম AI প্লাটফর্ম তৈরি করেছে।

এই প্ল্যাটফর্মটি কাদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী?

Jukti.ai মূলত চারটি প্রধান সেক্টরের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকেরই রয়েছে ভিন্ন রকমের চাহিদা:

  • Content Creation: আপনি যদি একজন ইউটিউবার, ব্লগার বা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হন, তাহলে আপনার প্রতিনিয়ত আকর্ষণীয় থাম্বনেইল, রিলস বা ছবির প্রয়োজন হবে। Jukti ai ব্যবহার করে আপনি মিনিটের মধ্যেই আপনার ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করতে পারবেন, পুরোনো ছবিকে আরও ঝকঝকে করতে পারবেন এবং ভিডিওর জন্য আকর্ষণীয় ক্লিপ তৈরি করতে পারবেন।
  • E-commerce Brands: অনলাইন স্টোরের জন্য প্রোডাক্ট এর ছবি হলো সবকিছু। Daraz, Shopify বা Facebook Marketplace এর জন্য সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ছবি তৈরি করা, প্রোডাক্টের রঙ পরিবর্তন করে বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট দেখানো, বা মডেল ছাড়াই প্রোডাক্টের লাইফস্টাইল ফটোগ্রাফি তৈরি করার মতো কাজগুলো Jukti.ai দিয়ে অনায়াসে করা যায়।
  • Creative Agencies: যারা freelancing করেন বা একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করেন, তাদের জন্য সময় অত্যন্ত মূল্যবান। Jukti.ai ব্যবহার করে আপনারা নিজেদের প্রোডাক্টিভিটি বহুগুণে বাড়িয়ে তুলতে পারেন। এতে ক্লায়েন্টকে দ্রুত প্রজেক্ট ডেলিভারি দিতে পারবেন।
  • Product Teams: যেকোনো কোম্পানির মার্কেটিং বা প্রোডাক্ট টিমের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ওয়েবসাইট ব্যানার বা ads এর জন্য ভালো কোয়ালিটির ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট তৈরি করা এখন অনেক বেশি সহজ এবং সাশ্রয়ী।

আর ফটোশপের প্রয়োজন নেই। গুগল নিয়ে এসেছে এক বিপ্লবী AI টুল, nano-banana

এক প্ল্যাটফর্মেই পাচ্ছেন 11 টিরও বেশি AI টুলস

Jukti ai কে বাংলাদেশের “অল-ইন-ওয়ান” ভিজ্যুয়াল ক্রিয়েশন সলিউশন বললে ভুল হয় না। এখানে ছবি এবং ভিডিওর জন্য 11 টিরও বেশি AI টুল রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয় টুল হলো:

  • Background Remove: যেকোনো ছবি থেকে নিখুঁতভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড সরিয়ে transparent PNG ফাইল তৈরি করা, এমনকি মানুষের চুলের মতো সূক্ষ্ম ডিটেইলস সহ। এটা লোগো এবং প্রোডাক্ট এর ছবির জন্য অপরিহার্য একটা টুল।
  • Photo Upscale: আপনার কাছে কি কোনো পুরোনো বা কম রেজোলিউশনের ছবি আছে? এই টুলটি দিয়ে সেই ছবির রেজোলিউশন ৪ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে সেটাকে হাই-কোয়ালিটি এবং প্রিন্ট-রেডি ছবিতে কনভার্ট করা যায়।
  • Watermark Remove: অনেক সময় ভালো কোনো ছবি পেলেও তাতে watermark থেকে যায়। এই টুলটার সাহায্যে ছবির কোয়ালিটি ঠিক রেখে নিমিষেই যেকোনো ধরনের watermark সরিয়ে ফেলা যায়। 
  • Dress Modify: ফ্যাশন বা ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা যুগান্তকারী টুল। মডেলের পোশাকের রঙ, ডিজাইন বা স্টাইল পরিবর্তন করে একটা ছবির একাধিক ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করা যায়।
  • Prompt to Image: আপনি শুধুমাত্র টেক্সট লিখে আপনার কল্পনাকে বাস্তব ছবিতে কনভার্ট করে করতে পারবেন। গ্রাফিক ডিজাইন বা কনসেপ্ট আর্টের জন্য এটা অসাধারণ।
  • Video Shoot: প্রোডাক্টের জন্য ছোট ছোট ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য রিলস বা ওয়েবসাইটে ব্যবহারের জন্য প্রিভিউ ভিডিও তৈরি করতে AI Video Shoot টুলটা ব্যবহার করতে পারেন।

Jukti ai কি আসলেই সস্তা?

অনেকেই জানতে চান Jukti ai কি ফ্রি? আজ্ঞে না, এটা ফ্রি নয়। তবে এর কোনো মাসিক বা বার্ষিক ফি না থাকায় এটা  অত্যন্ত সাশ্রয়ী। Jukti ai ক্রেডিট-ভিত্তিক “Pay-as-you-go” মডেলে কাজ করে। অর্থাৎ, আপনি ঠিক যতটুকু ব্যবহার করবেন, শুধু ততটুকুর জন্যই পেমেন্ট করবেন। ফলে আপনার টাকা নষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আপনি 500 টাকা দিয়ে 5000 ক্রেডিট কিনতে পারেন। এই ক্রেডিট ব্যবহার করে আপনি 11 টিরও বেশি সার্ভিস, যেমন – ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ, ফটো আপস্কেল বা ওয়াটারমার্ক রিমুভ করতে পারবেন। প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রেডিট খরচ হয়। ফলে, আপনার যখন প্রয়োজন, শুধু তখনই খরচ করবেন।

কেন Jukti ai অন্যদের থেকে আলাদা?

বাজারে অনেক AI টুল থাকলেও Jukti ai বাংলাদেশের প্রথম AI প্লাটফর্ম এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে নিজেকে আলাদা প্রমাণ করেছে।

  • Flexible Pricing Model : আগেই বলেছি, মাসে মাসে বা প্রতি বছর টাকা দেয়ার প্রয়োজন নেই। এটা ক্রেডিট-ভিত্তিক “Pay-as-you-go” মডেলে কাজ করে।
  • Multiple Tools : আপনাকে ছবি বা ভিডিওর বিভিন্ন কাজের জন্য Canva, Remove.bg, বা Photoshop এর মতো আলাদা আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে না। প্ল্যাটফর্মেই আপনি সব সমাধান পাচ্ছেন, যা আপনার সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচাবে।
  • Easy to Use : এর ইউজার ইন্টারফেস অনেক সোজা। তাই ফটোশপের মতো জটিল সফটওয়্যারের ট্রেনিং না নিয়েও, এডিটিং এর কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই যে কেউ প্রথম দিন থেকেই প্রফেশনাল মানের কাজ করতে পারে।
  • Developer-Friendly : যারা নিজেদের অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে Jukti ai এর টুলগুলো ইন্টিগ্রেট করতে চান, তাদের জন্য API ব্যবহারের সুযোগও রয়েছে, যা দিয়ে অটোমেটেড ওয়ার্কফ্লো তৈরি করা সম্ভব।

ফ্রীতে সেরা AI ভিডিও এডিটিং প্লাটফর্ম। এবার হলিউড আপনার হাতের মুঠোয়!

আশা করি, Jukti ai কি এবং এটি কীভাবে কনটেন্ট তৈরির কাজকে সহজ, দ্রুত এবং সাশ্রয়ী করে তুলেছে, সে সম্পর্কে আপনি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে করা জটিল এডিটিং এর কাজ যখন মিনিটের মধ্যে করা যায়, তখন মূল্যবান সময় এবং শ্রম দুটোই বাঁচে। বাকি সময়টা আপনি আপনার ব্যবসা বা ক্রিয়েটিভিটির জন্য কাজে লাগাতে পারেন। Jukti ai বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটা অসাধারণ প্লাটফর্ম, যা কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।

Jukti ai এর মতো আরও AI প্লাটফর্মস, AI টুলস সম্পর্কে জানতে এবং AI টিপসের জন্য jukti.tech এর সাথেই থাকুন।

FAQs (সাধারণ প্রশ্নোত্তর)

Jukti ai ব্যবহার করতে কি মাসে মাসে টাকা দিতে হবে ?

না, মাসে মাসে টাকা দিতে হবেনা। এটা ক্রেডিট-ভিত্তিক সিস্টেমে কাজ করে, যেখানে আপনি প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রেডিট কিনে ব্যবহার করতে পারবেন।

Jukti ai কি শুধু বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য ?

না, Jukti ai বাংলাদেশি ভিত্তিক হলেও যে কেউ google দিয়ে একাউন্ট বানিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

ছবি বা ভিডিও এডিট করার পর কোয়ালিটি কেমন থাকে ?

Jukti.ai “Production-ready” বা কমার্শিয়াল ব্যবহারের উপযোগী হাই-কোয়ালিটি আউটপুট প্রদান করে। যেমন, এর Photo Upscale টুল পুরোনো ছবিকে 4K মানের রেজোলিউশনেও রূপান্তর করতে পারে।

Jukti ai তে পেমেন্টের জন্য কী কী অপশন রয়েছে?

Jukti ai তে আন্তর্জাতিক ব্যবহারকারীদের জন্য Visa, Mastercard, Stripe এবং বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের জন্য bKash ও sslcommerz এর মতো লোকাল পেমেন্ট অপশনের সাপোর্ট রয়েছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই আর্টিকেলে আলোচিত Jukti ai একটি স্বতন্ত্র AI প্ল্যাটফর্ম। আমাদের ব্লগ Jukti.tech এবং Jukti.ai দুটি সম্পূর্ণ আলাদা প্রতিষ্ঠান এবং এদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।

Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x